শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৫৪ অপরাহ্ন
থানা প্রতিনিধি : মুলাদীতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের সাথে প্রধান শিক্ষিকার পরকীয়া প্রেমের ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের ৯৪নং মধ্য চরমালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ হুমায়ুন কবিরের সাথে একই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আশরাফুন্নেছার পরকীয়া প্রেমের ঘটনায় স্থানীয় অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। যদিও প্রধান শিক্ষিকা ও সহকারী শিক্ষক কয়েক দিন আগে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন বলে দাবী করেছেন।
আশরাফুন্নেছা গত ১৩ সেপ্টেম্বর ওই বিদ্যালয়ে চলতি দায়িত্বে প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেন। জানাগেছে উপজেলার পূর্বচরপদ্মা গ্রামের আঃ কাদের মৃধার কন্যা ৩ সন্তানের জননী আশরাফুন্নেছা মধ্য চরমালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা পদে যোগদানের কয়েক দিনের মধ্যেই চরকালেখান ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের ফজলে করিম মৃধার পুত্র একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ১ সন্তানের জনক হুমায়ুন কবিরের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।
প্রধান শিক্ষিকার সাথে পরকীয় প্রেমে জড়িয়ে পড়ার পর থেকেই হুমায়ুন কবির বিভিন্ন অজুহাতে তার নিজ স্ত্রী-সন্তান থেকে দূরে থাকতে শুরু করলে পরিবারের মধ্যে সন্দেহ দেখা দেয়। কয়েক সপ্তাহ আগে হুমায়ুন কবিরের স্ত্রী মাহফুজা বেগম স্বামীর অনুপস্থিতির বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান। গত মঙ্গলবার হুমায়ুন কবির বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার মোবাইল ফোনটি বাসায় চার্জ দিতে নিয়ে যান এবং ভুলে বাসায় রেখে মুলাদী উপজেলা সদরে চলে আসেন। ওই সময় হুমায়ুন কবিরের মেয়ে ৯ম শ্রেণির ছাত্রী হামিদা আক্তার মুক্তা কৌতূহল বশতঃ অপরিচিত মোবাইল ফোনটি খুলে মোবাইলের মধ্যে তার পিতা ও প্রধান শিক্ষিকা আশরাফুন্নেছার কথোপকথন শুনতে পেয়ে তার মাকে অবহিত করে।
বিকালে হুমায়ুন বাসায় ফিরলে তার স্ত্রী এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং বিকালেই ঢাকা যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যানু। গতকাল বুধবার সকালে হুমায়ুনের স্ত্রী মাহফুজা বেগম বিষয়টি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার কাছে গেলে স্থানীয় প্রায় ২শতাধিক নারী-পুরুষ বিদ্যালয় মাঠে জড়ো হয় এবং হুমায়ুনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়লে প্রধান শিক্ষিকা তাদের বিবাহ হয়েছে বলে দাবী করে স্থানীয়দের ক্ষান্ত করেন। এ বিষয়ে হুমায়ুনের কাছে জানতে চাইলে তিনি মোবাইল ফোনে জানান ১০/১৫ আগে বরিশাল কাশিপুর কাজী অফিসে প্রধান শিক্ষিকার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন।
কিন্তু তিনি সঠিক দিন-তারিখ বলতে অপরগতা প্রকাশ করেন। এদিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ও সহকারী শিক্ষকের মধ্যে পরকীয়া প্রেম কিংবা বিয়ের বিষয়টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। তাই তারা অবিলম্বে এই দুই শিক্ষকের বদলীর দাবী জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নিজাম উদ্দীন খান জানান শিক্ষক-শিক্ষিকা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে আমাদের কিছু করার নেই। তবে স্থানীয়দের ক্ষোভের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন জানান কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অপরদিকে সহকারী শিক্ষক হুমায়ুন কবিরের স্ত্রী মাহফুজা বেগম জানান তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন। এ ছাড়া প্রথম স্ত্রীর বিনা অনুমতিতে ২য় বিয়ের বিষয়ে তিনি আদালতের মাধ্যমে আইনি লড়াই করবেন বলে জানান।
Leave a Reply